আগামী বৃহস্পতিবার (১১ জুন) সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ বাজেটে কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রগুলো আরও বাড়ানো হতে পারে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘দেশে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কোনো প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার অনুমতি দিতে পারে।’
তিনি জানান, করোনা প্রাদুর্ভাব এবং অর্থনীতিতে এর প্রভাব কালো টাকার মালিকদের ছাড়পত্র দেয়ার বিষয়ে সরকারকে ভাবতে বাধ্য করছে।
বর্তমানে প্রযোজ্য শুল্কের ওপর অতিরিক্ত চার্জ দেয়ার মাধ্যমে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে।
তবে আসন্ন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আরও বাড়ানো হবে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘কেবল ১০ শতাংশ কর দেয়ার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব দেয়া হতে পারে যেখানে অর্থের উৎস সম্পর্কে এনবিআর কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না।’
এনবিআর কর্মকর্তা জানান, অর্থের উৎস যাই হোক না কেন কালো টাকার বাহকরা পরবর্তী দুই বছরের জন্য তা সাদা করার সুযোগ পেতে পারেন।
তিনি বলেন, কালো টাকাওয়ালারা উৎপাদনশীল কোনো খাতে অর্থ বিনিয়োগের ঘোষণা দিলে এনবিআর সেই অর্থের উৎস নিয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না।
‘এ ক্ষেত্রে করের হার ১০ শতাংশ হতে পারে,’ জানান এনবিআরের ওই কর্মকর্তা।
বর্তমানে যে কেউ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কগুলোতে ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য কালো টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। পাঁচ বছরের এ সুযোগ ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
‘নতুন খাত যেমন কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প এবং বড় অবকাঠামোগত বিনিয়োগ খাতগুলো আগামী অর্থবছর থেকে এ ছাড়পত্রের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে,’ যোগ করেন এনবিআর কর্মকর্তা।
তবে, এখন পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কগুলোতে বিনিয়োগের এ সুযোগ কেউ গ্রহণ করেননি বলেও জানান তিনি।
ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে যেকোনো ব্যক্তি কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি না হয়েই ফ্ল্যাটের আকার এবং এলাকার ওপর নির্ভর করে অতিরিক্ত ট্যাক্স দিয়ে কালো টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন।
এ সুযোগ আগে থেকেই রয়েছে, তবে আরোপিত অতিরিক্ত করের কারণে কেউ তা গ্রহণে আগ্রহ দেখায়নি।
চলতি অর্থবছরে এ খাতে করের হার ৩০ শতাংশে নামানো হলেও এখান থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো উপার্জন করা সম্ভব হয়নি এনবিআরের পক্ষে।
‘অতিরিক্ত করের কারণে যাদের কাছে কালো টাকা রয়েছে তারা তাদের এ অর্থ বৈধ করেননি। তবে সরকার এখন কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে আরও বেশি সুযোগ দিতে চায়। এ জন্যই অতিরিক্ত করা ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে,’ জানান এনবিআর কর্মকর্তা।